খাপছাড়া আড্ডা

শাড়ির ইতিবৃত্ত

লিখেছেনঃ সুবর্ণা বিশ্বাস

সুবর্ণা বিশ্বাস

ইতিহাসবিদদের মতে, সংস্কৃত ‘সত্তিকা’ শব্দ থেকে শাড়ি শব্দটির জন্ম যার অর্থ ‘কাপড়ের টুকরা’ অর্থাৎ শাড়ি। তবে অনার্য সভ্যতায় অনেক আগে থেকেই শাটী’ শব্দটি প্রচলন পরিলক্ষিত হয় বিধায় কেউ কেউ মনে করেন শাঢীই শাড়ির মূল শব্দ। শাড়ির ব্যবহারের প্রমাণ মিলে মহাভারতেও। সেখানে দ্রৌপদীর যে ‘বস্ত্রহরণ’ করা হয়েছিল, সেটাও শাড়িই ছিল বলে অনুমেয়।

সিন্ধু সভ্যতায় পাওয়া প্রত্নবস্তুতে (৩৩০০-১০০০ খৃষ্ট পূর্বাব্দ) মহিলাদের দেহে এক খণ্ড কাপড়ের ব্যবহার দেখা যায়। ঐতিহাসিকদের মতে, মেসোপটেমিয়ার মানুষরা যে লয়েন কাপড় পরতো, তা থেকেই শাড়ীর ধারণার শুরু। পরবর্তীতে আর্যরা এটা বয়ে নিয়ে আসে এ উপমহাদেশে।

এই দুই ধারনার সংমিশ্রণে সিন্ধু সভ্যতার মানুষদের শাড়ীর মত পোষাক পরতে দেখা যায়। সিন্ধু সভ্যতায় যে চারকোণা এক টুকরো কাপড়ের উদাহরণ পাওয়া গেছে; তা দেহের উপরিভাগ ঢেকে রাখতো, যাকে উত্তরীয় বা ওড়না বলা যায়। আর নিচের অংশকে ঘাগরা বলা যায়। এভাবেই ধীরে ধীরে বিবতর্নের মধ্যে দিয়ে এক খণ্ড কাপড় শাড়িতে রূপান্তরিত হয়েছে।

শাড়ি প্রাচীন হওয়া সত্বেও এর জনপ্রিয়তা কোনভাবেই কমেনি। পাল আমলের পাহাড়পুরের (অষ্টম শতাব্দী) কিছু ভাস্কর্যে শাড়ীর ব্যবহার দেখা যায়। সেখানে শাড়িই ছিল মহিলাদের প্রচলিত পোশাক। প্রাচীন হিন্দুধর্ম মতে সেলাই করা কাপড় ছিল অশূচী ও অমঙ্গলের। তারা লোহার সুঁই দিয়ে কাপড়কে ছিদ্র করাকে অপয়া মনে করত। তাই হয়তো দক্ষিণ ও পশ্চিম ভারতে সেলাই করা কাপড় পরার রেওয়াজ ছিল না। মেয়েদের ক্ষেত্রে সেলাইবিহিন অখণ্ড বস্ত্র ও পুরুষের ক্ষেত্রে ধুতি ব্যবহার করা হত।

ভারতে মুসলিমদের আসার সাথে সাথে এ উপমহাদেশের মানুষের পোষাকের যুগান্তকারী পরিবর্তন ঘটে। তারাই প্রথম সেলাই করা পোশাকের প্রচলন করে। তুর্কিরা পায়জামা, ব্লাউজ পরতো। এরপর মোগল সম্রাজ্ঞী, রাজকুমারী এবং অভিজাত নারীরা সম্রাট আকবরের আমলে নানান ধরনের বেশভুষা ব্যবহার করতেন। পরবর্তীতে, ব্রিটিশ আমলে ইংরেজরা দেখলেঅ ভারতীয় নারীরা পেটিকোট ছাড়া যেভাবে শাড়ী পরে তা খুবই বেমানান ও দৃষ্টিকটু। তখন তারা ভিক্টোরিয়ান রীতি অনুসারে সমগ্র ভারতে বাধ্যতামূলকভাবে শাড়ীর সাথে পেটিকোট ও ব্লাউজ ব্যবহার চালু করে।

পরিবেশ ও জীবিকার ভিন্নতার কারণে বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন ধরনের শাড়ি এবং শাড়ি পরার ধরণ রয়েছে। আজকের শাড়ি অখণ্ড হলেও তার সঙ্গে যোগ হয়েছে আরও বস্ত্র যা সেলাই করা অর্থাৎ অখণ্ড নয়। শুধু শাড়ি পরার প্রথা আজ আর নেই। এর সঙ্গে অনিবার্য অনুষঙ্গ হিসেবে এসেছে ব্লাউজ এবং সেই সঙ্গে পেটিকোট বা সায়া ।

আদিকালে বর্তমান যুগের মতো শাড়ি পরার কায়দা ছিল না। কালিদাসের শকুন্তলার শাড়ি আর ভারতচন্দ্রের বিদ্যাসুন্দর কাব্যের নায়িকা বিদ্যার শাড়ি এক নয়। এ ভিন্নতা শুধু শাড়ির বৈচিত্র্যে নয়, শাড়ি পরার ধরনেও।

এক কালে শাড়ি পরার দুটি ধরন ছিল, আটপৌরে ও পোশাকি। মেয়েরা শাড়ি পরতো কোমর জড়িয়ে, পরার ধরন অনেকটা পুরুষের ধুতি পরার মতোই, যদিও পুরুষের মতো মেয়েদের পরিধেয়তে সাধারণত কোন কাছা থাকতো না। আদিকালের বসনের মতো আজকের শাড়িও একখণ্ড বস্ত্র যা দশ, এগারো কি বারো হাতের।

শাড়ি পরার ধরনও সব জায়গায় এক নয়। কেরালা, কর্ণাটক, তামিলনাড়ু, উত্তর প্রদেশ, বাংলাদেশ ইত্যাদি জায়গায় শাড়ি পরার কায়দায় নিজ নিজ এলাকার বৈশিষ্ট্য প্রতিফলিত। শাড়ি পরায় পার্থক্য আছে বিভিন্ন শ্রেণি ও জীবিকাধারীর মধ্যেও। শাড়ির ইতিহাসের মতোই আছে শাড়ি পরার ধরনেরও ইতিহাস।

আজকের শাড়ি পরার স্টাইল প্রথম চালু করেন জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারের মেয়েরা। রবীন্দ্রনাথের বৌদি জ্ঞানদানন্দিনী ঠাকুরই ছিলেন এর প্রধান। তার মাধ্যমেই আধুনিক শাড়ী পরার যে চল চালু হয়, তা আজও বর্তমান। এ কুচি পদ্ধতি বাঙালি সমাজে শুরুতে সমালোচিত হয়েছিল। যারা সাহস করে পরেছেন তাদের খ্রিস্টান, ব্রাহ্ম কিংবা হিন্দুস্থানি বলে কটাক্ষ করা হতো। তবে বাঙালি সমাজে শিক্ষিতা ও আধুনিকা মেয়েরাই এ পদ্ধতি আগে গ্রহণ করে। কেবল রূপদান নয়, বাঙালি সমাজে ঐতিহ্যগতভাবে ভারত ও দক্ষিণ এশিয়ার মহিলাদের সবচেয়ে উপযুক্ত পোশাক হল শাড়ি। বর্তমান যুগেও বাঙালি রমণীর প্রথম পছন্দ শাড়ি।

ইতিহাসে শাড়ি পরার প্রায় ৮০ টির ও বেশি পদ্ধতি পাওয়া যায়। কোমরের চারপাশে শাড়ি জড়ানোর সবচেয়ে সাধারণ পদ্ধতিটি হল শাড়ির এক প্রান্ত কোমড়ে প্যাঁচিয়ে অপর প্রান্তটি অর্থাৎ আঁচল কাঁধের উপর দিয়ে পেছনে ঝুলিয়ে পরিধান করা। তবে শাড়ি বেশ কয়েকটি পদ্ধতিতে প্যাঁচ চিয়ে পড়া যেতে পারে, যদিও কিছু শাড়ি পরার ধরনের জন্য নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্য বা আকারের শাড়ি প্রয়োজন। শাড়ির ইতিহাসবিদ এবং স্বীকৃত বস্ত্রশিল্প পণ্ডিত রতা কাপুর চিশতি তার ‘Saris: Tradition and Beyond’ গ্রন্থে শাড়ি পরিধানের ১০৮টি পদ্ধতি নথিভুক্ত করেছেন।

প্রাক্-শিল্পবিপ্লব যুগে বাংলাদেশ ছিল পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম বস্ত্রশিল্প কেন্দ্র। খ্রিস্টাব্দ-পূর্ব কাল থেকেই এদেশে বস্ত্রশিল্পের বুনিয়াদ গড়ে ওঠে। ঢাকা, কাপাসিয়া, সোনারগাঁও, দিনাজপুর, বগুড়া, রাজশাহী, নোয়াখালী, কুষ্টিয়া, খুলনা, কুমিল্লা বস্ত্রশিল্পের জন্য প্রসিদ্ধ ছিল। রিয়াজুস সালাতিন গ্রন্থে (গোলাম হোসাইন সলিম, ১৭৮৮) সোনারগাঁয়ে মসলিন উৎপাদিত হতো বলে উল্লেখ আছে। আরও উল্লেখ আছে যে, সরকার ঘোড়াঘাটে (দিনাজপুর, রংপুর, বগুড়া, রাজশাহী ও মালদা নিয়ে গঠিত) গঙ্গাজলী বস্ত্র উৎপাদনের খ্যাতির কথা। সাদুল্লাপুর, নিশ্চিন্তপুর, আমিনপুর জেলায় বিখ্যাত ‘পাবনাই পাড়’ কাপড় তৈরি হতো। নোয়াখালীর যুগদিয়া লক্ষ্মীপুর ও কলিন্দার বস্ত্রের জন্য খ্যাত ছিল। কুমারখালি ও সাতক্ষীরার শাড়িও সুনাম অর্জন করেছিল। মগ রমণীদের সুতি ও রেশমি বস্ত্রবয়নের কথা লেখা আছে হান্টারের ও বার্ডউডের গ্রন্থে।

বাংলাদেশের মসলিন ও জামদানির খ্যাতি ছিল বিশ্বজোড়া। সুতিবস্ত্রের মতোই বিখ্যাত হয়েছিল বাংলার রেশমি বস্ত্রও। এসব ছাড়াও ঢাকায় নানা ধরনের কাপড় বোনা হতো। টেলরের মতে, ১৮৪০ সালে বস্ত্রশিল্প যখন ধ্বংসের মুখে তখনও ঢাকায় ৩৬ রকমের কাপড় বোনা হতো। কালক্রমে যান্ত্রিক উৎপাদনের প্রসার ও নানা জটিলতায় তাঁতশিল্প সীমিত হয়ে পড়ে।

দেশভেদে শাড়ীর প্রকারভেদ

বাংলাদেশী শাড়িঃ বাংলাদেশের অনেক জায়গায় বিভিন্ন মানের বিভিন্ন ডিজাইনের শাড়ি তৈরি হয়। বাংলাদেশের তৈরি শাড়ি জামদানি, কাতান, রাজশাহী সিল্ক, মণিপুরী শাড়ি, টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি, বালুচরি শাড়ি, পাবনার শাড়ি, ঢাকাই শাড়ি ইত্যাদি শুধু দেশে নয়, বিদেশেও মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। সাংস্কৃতিক ও সামাজিক অনুষ্ঠানে যেকোন ধরনের উজ্জ্বল শাড়ি পরার রেওয়াজ আছে। তবে বাংলা নববর্ষ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, একুশে ফেব্রুয়ারি ইত্যাদি দিনে বিশেষ ধরনের শাড়ি পরা হয়। বাংলা নববর্ষে লাল পাড়ের সাদা শাড়ি পরার রীতি দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত। অন্যান্য দিবসে উজ্জ্বল রঙের শাড়ি পরলেও একুশে ফেব্রুয়ারি কালো পাড়ের সাদা শাড়ি পরা হয়।

ভারতীয় শাড়িঃ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের ১০টি জনপ্রিয় শাড়ির নাম উল্লেখযোগ্য- ঢাকাই, বেনারসি, বোমকাই, পোচমপল্লী, কাঞ্জিভরম, কাসাভু, চান্দেরী, বাঁধনি, লহরিয়া এবং পৈঠাণী।

নেপালী শাড়িঃ নেপালীয় নারীরা বিভিন্নভাবে শাড়ি পরেন। এর মধ্যে হাকু পাতাসি উল্লেখযোগ্য। এটি লাল পেড়ে কালো শাড়ি।

পাকিস্তানী শাড়িঃ পাকিস্তানে প্রতিদিনের ব্যবহার্য শাড়ি স্থানে সালোয়ার-কামিজ প্রায় সম্পূর্ণ দখল করে নিয়েছে। তবুও শাড়ি অনেক অনুষ্ঠানে মধ্যবিত্ত এবং উচ্চবিত্ত শ্রেণির মধ্যে জনপ্রিয় পোশাক হিসাবে রয়ে গেছে। শাড়ির সর্বাধিক প্রচলন করাচি এবং ইসলামাবাদের মতো মহানগর এলাকায় সাধারণত দেখা যায় এবং বিয়ে ও অন্যান্য ব্যবসায়িক ধরনের কাজের জন্যেও নিয়মিত পরা হয়। সাধারণত মোহাজির নামে পরিচিত ভারতীয় অভিবাসী পাকিস্তানিরা শাড়ির ব্যবহার টিকিয়ে রেখেছে, যা প্রধানত করাচিতেই দেখা যায়। সিন্ধুতে অনেক মুসলিম নারীরা নিজের অবস্থান বা সৌন্দর্য বিকাশের জন্য শাড়ি পরেন।

শ্রীলঙ্কার শাড়িঃ শ্রীলঙ্কায় বিভিন্নভাবে শাড়ি পরা হলেও ভারতীয় ধরণেই শাড়ি বেশি পরা হয়ে থাকে, যা সাধারণভাবে কানাড়ীয় ধরণ (অথবা সিংহলিজ ভাষায় ‘ওসারিয়া’ নামে পরিচিত)। ক্যান্ডির পাহাড়ী এলাকায় ক্যান্ডীয় ধরন চালু রয়েছে।

তবে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শাড়িতেও আনা হয়েছে নানা পরিবর্তন। শাড়ির রং, সুতা ও ডিজাইনে পরিবর্তন এনে শাড়িকে করা হয়েছে ফ্যাশনেবল। শাড়ির আঁচল এবং পাড়ে আনা হয়েছে নানা বৈচিত্র্য। সময়ের দাবি মেটাতে শাড়ির কুঁচিতেও যুক্ত হয়েছে আলাদা ডিজাইন। আর নারীরা এসব পরিবর্তনকে সাদরে গ্রহণ করেছেন।

শাড়িতে ওয়েস্টার্ন লুক আনতে প্রতিনিয়ত শাড়ির ডিজাইন নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। এসব ডিজাইন বিভিন্ন নামে পরিচিতি পাচ্ছে। যেমন— প্যান্ট কাট শাড়ি, ঝালর শাড়ি বা বেল্ট শাড়ি। জানা যায় ঝালর, বেল্ট বা প্যান্ট কাট শাড়ির ধারণা ভারত থেকেই এসেছে। বলিউডে এসব শাড়ির চল অনেক বেশি। এ ধরনের শাড়িগুলো এখন বেশ ট্রেন্ডি। এ ছাড়া এসব শাড়িতে ওয়েস্টার্ন লুক এবং ফ্যাশনেবল হওয়ায় অনেকে ব্যবহার করছে। পরতেও সহজ।

ঝালর শাড়িঃ ঝালর শাড়ি বিভিন্ন নামে পরিচিত। অনেকে একে ফ্রিল বা রেফল শাড়ি বলে থাকেন। এই শাড়িতে কিছু কুঁচি ব্যবহার করা হয়। সেটা হতে পারে পাড়ে, আঁচলে বা কুঁচির জায়গাতে। এটাই হলো এর মূল বৈশিষ্ট্য। ঝালর শাড়ি বিভিন্ন ফ্যাব্রিকের হয়ে থাকে। তবে আমাদের দেশে ঝালর শাড়ি বেশির ভাগই সিনথেটিক ম্যাটেরিয়াল দিয়ে বানানো হচ্ছে। যেমন­— জর্জেট, থ্রি-ফন্ট বা সিল্ক। কটনেরও হয়। বিবি রাসেলের প্রোডাকশন হাউজ বিবি প্রোডাকশন ঝালর শাড়িতে কটন ব্যবহার করছে। তারা চার-পাঁচ বছর আগে থেকেই কটনের ঝালর শাড়ি করছে।

বেল্ট শাড়িঃ এই শাড়িটাও বলিউড সুপার স্টারদের বেশি পরতে দেখা যায়। বেশ স্টাইলিশ হয় বেল্ট শাড়ি। নাম বেল্ট শাড়ি হলেও, আসলে এখানে বেল্ট কিন্তু শাড়ির কোনো অংশ নয়। এখানে শাড়ির সঙ্গে আলাদা অ্যাক্সেসরিজ হিসেবে বেল্ট পরা হয়। একটা শাড়িকে বিভিন্ন স্টাইলে পরে তার সঙ্গে বেল্ট পরা হচ্ছে। এ কারণেই এই শাড়িকে আমরা বলছি বেল্ট শাড়ি। আবার শাড়ির সঙ্গে যে ব্লাউজ পরছে তার কাটিংয়ে একটি বেল্ট যুক্ত করা থাকে। সে ক্ষেত্রে শাড়ি পরার পরে ব্লাউজের সঙ্গে থাকা বেল্টটাকে পরে নিতে হয়। এই দুটিই হলো বেল্ট শাড়ির মূল কনসেপ্ট। এ ধরনের শাড়ির মাধ্যমে ফিউশনের দিকে চলে যাচ্ছে মানুষ। শাড়িটাকে ট্রাডিশনালভাবে না পরে একটু ওয়েস্টার্ন লুক আনতে বা নিজেকে স্টাইলিশভাবে উপস্থাপন করতে শাড়ির সঙ্গে বেল্ট পরা হয়।

প্যান্ট কাট শাড়িঃ প্যান্ট কাট শাড়ির মূল কনসেপ্ট হলো টোটালি ওয়েস্টার্ন লুক। এটাও ফিউশন, ওয়েস্টার্ন লুককে ফুটিয়ে তুলতেই প্যান্ট কাট শাড়ি। এ ধরনের শাড়ি অনেকটা রেডি শাড়ির মতোই। সবকিছুই আগে থেকে সেলাই করা থাকে। এটা আসলে একটি প্যান্ট। তবে প্যান্টের সঙ্গে অতিরিক্ত একটি অংশ যুক্ত করে দেওয়া হয়। অতিরিক্ত অংশটি হয় শাড়ির আঁচলের মতো। বাংলাদেশে এখনো সহজলভ্য না এই ধরনের শাড়ি। তবে বর্তমানে ক্লাব হাউজ কিছু কাজ করছে। এ ছাড়া বিভিন্ন বুটিক হাউজে পাওয়া যেতে পারে। বাংলাদেশের মানুষ এসব শাড়ি সাদরে গ্রহণ করেছেন। তবে এই তিনটি শাড়ির মধ্যে ঝালরের চল তুলনামূলকভাবে বেশি ।

আজকাল ঝালর শাড়ি অনেকেই ব্যবহার করছেন। বিশেষ করে সাধারণ মানুষও এটাকে গ্রহণ করেছেন। বিভিন্ন উৎসব বা পার্টিতে তারা ঝালর শাড়ি পরছেন। কিন্তু প্যান্ট কাট বা বেল্ট শাড়ি সবাই ব্যবহার করছেন না। এই দুটি বাংলাদেশে এখনো সেভাবে জনপ্রিয় হয়নি। যেহেতু এই দুটি একটু বেশিই ওয়েস্টার্ন, তাই দেখা যায় খুব লিমিটেড মানুষ এগুলো পরছেন। হাই-প্রোফাইল বা ফ্যাশন নিয়ে অতিরিক্ত সচেতন মানুষরা প্যান্ট কাট বা বেল্ট শাড়ি পরছেন।

পরিশেষে বলা যায় ,আমাদের ঐতিহ্য আর সংস্কৃতির ধারক এই শাড়ি। বারো হাত দীর্ঘ এই বস্ত্রখণ্ড রঙে, নকশায়, বুননে বাঙালির পোশাক ভাবনাকে দিয়েছে আলাদা পরিচিতি।

…………………..
পরিবেশনাঃ খাপছাড়া আড্ডা সাপ্তাহিক পাঠচক্র

Leave a Comment