Uncategorized

অপুংসক উপন্যাসের কিয়দংশ

এ্যামজনসহ বড় বড় বই কেনার সাইটগুলোতে বইয়ের প্রথম কয়েকটি অধ্যায় উন্মুক্ত থাকে। পাঠক চাইলে ঐ অংশটা বিনামূল্যেই পড়তে পারেন এবং ওটা দিয়েই তিনি বইটা যাচাই করতে পারেন। বাংলাদেশে তো আর সেই সিস্টেম নেই, তাই নিজের ব্লগে অপুংসকের প্রথম দেড় অধ্যায় উন্মুক্ত করে দিলাম। পোস্টের শেষে কেনার লিংক পাওয়া যাবে।

[এক]

অনুভবকে স্নানঘরে হস্তমৈথুনরত দেখে ফেলার পর থেকে কাজল তার সঙ্গে কথা বন্ধ করে দিয়েছে। আজ প্রায় তিন দিন পার হতে চলল তাদের মধ্যে একটা বাক্যও বিনিময় হয়নি। বরবারের মতোই এই তিন দিন তারা এক বিছানায় ঘুমিয়েছে, এক টেবিলে খেয়েছে, কিন্তু কেউ কারো সঙ্গে একটা কথাও বলেনি।

এটা অবশ্য ভুল বিবৃতি। অনুভব কাজলের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছিল, এই যেমন গতকাল সন্ধ্যায় কাজল যখন রাতের খাবারের যোগাড় করছিল, অনুভব রান্নাঘরে গিয়ে জানতে চেয়েছিল কোনো প্রকার সাহায্য করতে পারে কিনা, কিন্তু কাজল তার প্রশ্নের উত্তর দেয়নি। তারপর আজ সকালে অফিসে যাবার আগে সে বলেছিল কাজল চাইলে সে তাকে লিফট দিতে পারে। তাতেও সাড়া মেলেনি কাজলের তরফ থেকে। শেষেরটা অবশ্য একটু বাড়াবাড়িই ছিল। অফিসে কাজল কখনোই তার সঙ্গে একত্রে যায় না – অনুভবের অফিস দূরে এবং কাজলের চেয়ে আধঘণ্টা আগেই শুরু হয়, ফলে অনুভবের সঙ্গে গেলে অফিস সময়ের প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা আগে গিয়ে বসে থাকতে হবে তাকে।

অনুভবের কাছে কাজলকে এখন একটা সুপ্ত আগ্নেয়গিরি মনে হচ্ছে, যে-কোনো সময়ে বিস্ফোরণ ঘটবে। সেই বিস্ফোরণের হাত থেকে কীভাবে নিজেকে রক্ষা করা সম্ভব, এটাই এখন ভাবনা তার। কোনো যুক্তিকেই ঠিক যুৎসই মনে হচ্ছে না তার কাছে। সে বুঝতে পারছে না কেন একজন বিবাহিত পুরুষ স্বমেহন করতে পারবে না। বিয়ের সংবিধানে এমন কিছু লেখা আছে নাকি যে সে এটা করতে পারবে না?

বিয়ের সংবিধান কথাটা মনে পড়তেই অনুভবের মনে পড়ল তাদের বিয়ের কোনো কাগজপত্র নেই, এমনকি নিবন্ধনও নেই। তাহলে এখন কাজল যদি বিবাহবিচ্ছেদ চায়, উপায় কী হবে? হিন্দু দম্পতিদেরও তো বিবাহবিচ্ছেদ হয়, হয় না কি? তার এক উকিল বন্ধু একবার বলেছিলেন, বাংলাদেশে হিন্দু দম্পতিদের আসলে আইনগত বিবাহবিচ্ছেদ হয় না, যা হয় তা হলো দুই জনের (আসলে দুই পক্ষের) মধ্যে একটা সম্মতি (আসলে অসম্মতি), যাতে দুই পক্ষ একমত হয়ে স্বাক্ষর করেন। মুসলমানদের তবু কাবিননামা থাকে, নিবন্ধন থাকে, হিন্দুদের কিছুই থাকে না। সে শুনেছে এখন নাকি নিবন্ধন করা সম্ভব। তবে সে যখন বিয়ে করেছিল, তখন ওসবের বালাই ছিল না, অথবা এ বিষয়ে সে ওয়াকিবহাল ছিল না।

না, এই বয়সে বিবাহবিচ্ছেদের ঝক্কি সে পোহাতে পারবে না। সবচেয়ে বড় ঝামেলাটা হবে তাদের সন্তানকে নিয়ে। বহুব্রীহি কার সঙ্গে থাকবে? সে শুনেছে এসব ক্ষেত্রে মা-ই নাকি সন্তানের দায়িত্ব পায়। কাজল যেহেতু স্বনির্ভর, সে চাইলেই অনায়াসে বহুব্রীহিকে নিজের হেফাজতে নিতে পারবে। আইন এক্ষেত্রে নারীর প্রতি উদার। অনুভব বহুব্রীহিকে ছাড়া থাকতে পারবে না।

কিন্তু কাজল কি চাইলেই বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করতে পারে? কোনো কারণ দর্শাতে হবে না কি তাকে? স্বমেহন কি বিবাহবিচ্ছেদের কারণ বলে বিবেচিত হতে পারে? সে জানে না। এ ব্যাপারে আইন কী বলে তা জানতে হবে তাকে।

অনুভব ভেবে দেখল বিবাহবিচ্ছেদের কারণ হিসেবে কেবল স্বমেহনই নয়, কাজল চাইলে আরো কিছু যোগ করতে পারবে। গত ছ-সাত মাসে তাদের মধ্যে কোনো যৌন সম্পর্ক হয়নি; একবারের জন্যও না। এর মধ্যে কাজল অন্তত দু-কুড়িবার তাকে যৌনমিলনে আহ্বান জানিয়েছিল, তার শরীরকে জাগানোর চেষ্টা করেছিল, কিন্তু অনুভবের শরীর একবারের জন্যও তাতে সাড়া দেয়নি। এটাকে কি বিবাহবিচ্ছেদের কারণ হিসেবে উপস্থাপন করা সম্ভব? এ ব্যাপারেও জানতে হবে তাকে।

কাজলের রেগে থাকার যুক্তি রয়েছে বলে মনে হলো অনুভববের। যে ব্যক্তি ছয় মাসেও তার স্ত্রীর সঙ্গে একবার যৌনমিলনে রত হয় না, সে স্বমেহন করবে, কোনো স্ত্রীই সম্ভবত এটা মেনে নিতে পারবে না। অন্য স্ত্রীদের কথা সে জানে না। কাজল যে পারেনি, সেটা সে হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে।

প্রচ্ছদঃ রাজীব দত্ত

স্বমেহন অনুভবের খুব পুরোনো অভ্যাস। সেই কৈশোর থেকেই নতুন কোথাও বেড়াতে গেলে প্রথমেই মনে হতো সেখানে তার বীর্য রেখে যেতে হবে। জলে, স্থলে, অন্তরীক্ষে সবখানেই সে হস্তমৈথুন করেছে। লঞ্চের কেবিন, ট্রেন-উড়োজাহাজের টয়লেট, গাছে চড়ে, নদী, খাল, বিলে ডুবানো বা স্নানের কালে, অফিসে ডেস্কে বসে, কোনোকিছুই সে বাদ রাখেনি। একবার তাদের এলাকায় বন্যা হলে সে নৌকা নিয়ে বিশাল বিলের মাঝখানে চলে গিয়েছিল শুধু হস্তমৈথুনের লক্ষ্যে। সেখানে নৌকায় দাঁড়িয়ে স্বমেহন করতে করতে তার মনে হয়েছিল বন্যা তাদের যে ক্ষতি করছে, বন্যার জলে বীর্য ছেড়ে দিয়ে তার খানিকটা প্রতিশোধ নিচ্ছে সে।

তার এই আচরণকে নিজের কাছে কখনোই খারাপ কিছু মনে হয়নি। সে যা কিছু করেছে নিজে নিজে। এর জন্য কারো অধিকার লঙ্ঘিত হয়নি, কাউকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতেও পড়তে হয়নি। কোনো মেয়েকে সে কোনোদিন উত্যক্ত করেনি। সত্যি কথা বলতে কৈশোর থেকে যৌবনের অনেকটা অবধি হস্তমৈথুন করতে তাকে কোনো নারী শরীর কল্পনাও করতে হতো না, যে-কোনো নতুন জায়গায় গেলেই তার ওটা করতে ইচ্ছে জাগত এবং তাতেই শরীর জাগত। এখন তাকে কিছু কল্পনা করতে হয়, পর্ন দেখতে হয় বা নারীর উলঙ্গ স্থিরচিত্র প্রয়োজন হয়। তবে সেটা ইন্টারনেট বা ভিজ্যুয়াল প্রযুক্তির সহজলভ্যতার পরে।

বিয়ের পরে যখন তারা সপ্তাহে দশ, পনেরো কিংবা কুড়িবারও মিলিত হতো, তখনও সে মাঝে মাঝে স্বমেহন করত। কাজলের সঙ্গে মিলনে কোনো সমস্যা হতো না তাতে, সে চাইলেই শরীর জাগত। তাহলে এখন কেন হচ্ছে? এখন কেন জাগছে না? আর কাজলই বা কেন মানতে পারছে না স্ত্রী থাকার পরেও অনুভব হস্তমৈথুন করতে পারে? তার স্বমেহনের সাথে তাদের যৌনমিলনের কী সম্পর্ক? আদৌ কোন সম্পর্ক রয়েছে কি? দুটো বিষয় কি সম্পূর্ণ আলাদা নয়? যদি আলাদা না হতো, তাহলে তো বিয়ের পরপরই একই ধরণের সমস্যা হওয়ার কথা ছিল।

হ্যাঁ, কাজল তাকে জাগাতে চাইলেও তার শরীর জাগে না, এটা সত্য। কিন্তু এতে অনুভবের কী করার আছে? তার মনে পড়ে গেল চন্দ্রবিন্দুর ‘এক ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল’ গানের সেই বিখ্যাত লাইন – দিদিমনি, উনিই আসলে দোষী তো! আর এটা মনে পড়তেই হাসি পেল তার।

না, সে হাসতে পারল না। দেশের অন্যতম সেরা টেলিকম কোম্পানির তথ্যপ্রযুক্তি কর্মকর্তারা অফিসে হাসেন না। সুন্দরী সহকর্মীর চোখে তাকিয়ে মিষ্টি করে হাসা, আর একা একা হাসা ভিন্ন ব্যাপার। কর্পোরেটদের হাসির অভিধান মেনে চলতে হয়।

অবশ্য এখন অনুভবের হাসি নিয়ে ভাবার সময় নেই। না, হাতে খুব কাজ নেই। তবে এখন সে নিজেকে বুঝতে চায়; নিজের শরীরকে বুঝতে চায়; কাজলকে বুঝতে চায়। সে বুঝতে পারে না কেন কাজলের খোঁচাখুঁচিতে নাড়ানাড়িতে তার শরীর সাড়া দেয় না। অথচ একসময় কাজল পাশ দিয়ে হেঁটে গেলেও শরীর মাথাচাড়া দিয়ে উঠত। তখন কাজলের শরীরের একটা ঘ্রাণ ছিল, মদির-মাতাল ঘ্রাণ, যেটা নাকে গেলে শিরশির করে উঠত তার শরীর। মনে হতো সে পাগল হয়ে যাবে। শুধু ঘ্রাণ দিয়েই সে চোখ বুজে বলে ফেলতে পারত কাজল কাছাকাছি কোথাও রয়েছে অথবা একটু আগেই সেখানে ছিল। তখন তার শরীরকে জাগাতে না প্রয়োজন ছিল কাজলের ছোঁয়া, না দরকার ছিল কাজলের শরীরকে কল্পনা, শুধু ঘ্রাণেই জেগে যেত। সেইসব মাতাল দিন কোথায় গেল যখন লজ্জা-ভয়ের তোয়াক্কা না করে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের টয়লেটে পর্যন্ত মিলনে রত হয়েছিল! (সে অবশ্য ঐ একদিনই। পরবর্তীতে কাজল আর অতটা ঝুঁকি নিতে রাজি হয়নি।)

ব্যাক কভার ও ব্লার্ব

কাজলের শরীরের সেই মাতাল ঘ্রাণ কোথায় আজ? তবে কি কাজলও তার প্রতি আগের মতো টান অনুভব করে না? সেটাই বা কী করে সে দাবি করে? তাহলে এই যে মাঝে মাঝেই কাজল তাকে জাগানোর চেষ্টা করে, সেটা কি তার শরীর থেকে নয়, স্রেফে অভ্যাসবশে? তাই যদি হবে তাহলে সে অনুভবকে জাগাতে ব্যর্থ হয়ে অভিমান করবে কেন? কেন এমন ঘটনার পরে কয়েক দিন তাকে মুখ গোমড়া করে থাকতে দেখা যায়? সত্যিই যদি তার শরীর অনুভবকে না চায়, তাহলে স্রেফ অভ্যাসেই বা সে চাইবে কেন?

অনুভব ভেবে দেখল এদিক দিয়ে কাজল তার চেয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। তার নিজের শরীরের একটা প্রত্যঙ্গকে জাগাতে হয়, আর সেটা এমনি এমনি জাগে না, সেজন্য তার মানসিক প্রস্তুতি খুব গুরুত্বপূর্ণ। হ্যাঁ, কাজলের শরীরেও অবশ্যই পরিবর্তন ঘটে, তবে সেটা প্রয়োজনীয় হলেও সম্ভবত অত্যাবশ্যকীয় নয়।

এসব বিষয় নিয়ে খুব বিশদভাবে জানে না সে। তবে কাজলকে দেখে তার সবসময়ই মনে হয়েছে সে যৌনতাকে উপভোগ করে; অনুভবের সামান্য স্পর্শেই সে জেগে ওঠে। ছ-সাত মাস আগে তারা যখন সপ্তাহে কিংবা পনেরো-কুড়ি দিনে একবার মিলিত হতো, তখনও প্রায় সবসময়ই তা ঘটত অনুভবের আগ্রহে অথবা অনুগ্রহে; কাজলের চাওয়ায় নয়, কারণ কাজল চাইলেও অনুভবের শরীর জাগত না। কিন্তু অনুভব চাইতেই কাজল রাজি হতো, যেন অনুভবের কাছ থেকে এরকম কিছুরই প্রতীক্ষা করছিল সে। একবারের জন্যও সে অনুভবকে ফিরাত না। শুধু তাই নয়, সে সেটা উপভোগ করত।

অনুভবের কাছে এটাই এখন প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। উপভোগই যদি করে, তাহলে কাজলের শরীরের সেই মদির-মাদকতা ভরা ঘ্রাণ কোথায় গেল? তাহলে কি অভ্যাসের খাতিরে হলেও নিজেকে জাগাতে কাজল যতটা পারঙ্গম, অনুভব ততটা বা আদৌ পারঙ্গম নয়? কেন নয়? এমন যদি হতো যে সে কারো প্রেমে পড়েছে, তাহলেও না হয় একটা যুক্তি খুঁজে পাওয়া যেত। তাও তো নয়। তাহলে সমস্যাটা কোথায়?

অনুভবের কাছে এর চেয়েও বড় প্রশ্ন – অভ্যাসের বশেই বা মানুষকে যৌন মিলনে রত হতে হবে কেন? একটা মানুষ সারা জীবন মিলনহীন থাকলেই বা সমস্যা কোথায়? দুজন মানুষ পাশাপাশি বাস করবে কিন্তু মিলিত হবে না, তাতেই বা সমস্যা কী? তাদের একটা সন্তান রয়েছে। বহুব্রীহির জন্যই কি তারা দুজন একসঙ্গে জীবন অতিবাহিত করে দিতে পারে না? কেন তাদের এর চেয়েও বেশি কিছু প্রয়োজন? কেন তাদের শারীরিক মিলনে যেতেই হবে? অনুভবের ইচ্ছে করে না। তার ভালো লাগে না। ভালো না লাগলেও কেন সে জোর করে কাজলের সঙ্গে মিলনে বাধ্য হবে? একজন নারীর ইচ্ছের বিরুদ্ধে যৌনমিলনকে যদি ধর্ষণ বলা হয়, তাহলে একজন পুরুষের ক্ষেত্রেও কি সেই একই কথা প্রযোজ্য হবে না?

অনুভব বুঝতে পারে এখানেও সমস্যা পুরুষের ‘ওটা’তে। ওটা জাগলেই না তবে একজন পুরুষ নারীর সঙ্গে মিলিত হতে পারবে। আর ওটা যদি জাগেই তবে আর অনিচ্ছার ব্যাপারটা থাকে কোথায়? কিন্তু ওটাকে যদি জোর করে জাগানো হয়! মনের মানুষ সিনেমার একটা সংলাপ মনে পড়ে গেল তার – শরীর জাগে শরীরের নিয়মে, মন যদি না জাগে!

অনুভবের অবশ্য এতসব প্রশ্নের বালাই নেই। কাজলের স্পর্শে তার শরীর জাগেই না, তা কাজল যত চেষ্টাই করুক। তার মানে এখানে জোর করে জাগানোর প্রশ্ন আসে না। কিন্তু প্রশ্ন অন্যখানে। কেন তাহলে পর্ন দেখলে কিংবা চটি পড়লে তার শরীর জেগে যায়? আর জেগে গেলেই কেন তার স্বমেহন করতে ইচ্ছে জাগে? সে তো তখন কাজলের কাছে চলে যেতে পারে। কাজল যেহেতু সবসময়ই তাকে নিতে প্রস্তুত, তাহলে কেন ঐ অবস্থায় তার কাজলের কাছে যেতে ইচ্ছে করে না? কেন তার চেয়ে স্বমেহনই ভালো লাগে?

এসব প্রশ্নের উত্তরও অনুভবের জানা। সে দু-চার দশবার এরকম করেছে। পর্ন দেখার বা চটি পড়ার ফলে শরীর জাগতেই সে কাজলের কাছে গিয়ে পড়েছে। কাজল কখনোই তাকে ফিরায়নি এবং তারা দুজনই সেটা উপভোগ করেছে। কিন্তু ক্রমে দেখা গেল সে নিজে আর উপভোগ করতে পারছে না। নিজের কাছে নিজেকে অপরাধী মনে হচ্ছে; মনে হচ্ছে সে জোর করে কিছু একটা করছে যাতে তার মন নেই। এরকম ভাবনা আসতেই তার শরীর চুপসে যেতে চাইত। তখন সে জোর করেও আর সংগমে রত থাকতে পারত না। ফলে সেসব মিলনে কাজল পূর্ণসুখ পেলেও অনুভব পেত না, অথবা কাজলের চরম সুখের আগেই মাঝপথে অনুভবের শরীর শিথিল হয়ে যেত।

পরবর্তীতে অনুভব সিদ্ধান্ত নিল সে আর নিজের ওপর জোর করবে না। যদি কখনো সত্যি সত্যিই কাজলের জন্য শরীর জাগে তবেই মিলিত হবে, তা না হলে যেভাবে আছে সেভাবেই থাকবে। এতে কাজল কী ভাবল তাতে তার কিছু যায় আসে না। নিজের ওপর সে আর অত্যাচার করতে পারবে না। সেই থেকে হস্তমৈথুনকেই তার যৌনচাহিদা তৃপ্তির একমাত্র পথ হিসেবে বেছে নিয়েছিল অনুভব। এটাকে যৌনচাহিদা বলা যায় কিনা, এ ব্যাপারেও সে নিশ্চিত নয়। স্বতঃস্ফূর্ত যৌনতা বলা যায় বোধ হয়।

স্বমেহনের কাজটা সে করত স্নানঘরে। তবে কখনো কখনো শোবার ঘরেও, বিশেষ করে কাজল যখন বাসায় থাকত না বা অন্য কাজে ব্যস্ত থাকত। তিনদিন আগে কাজলের কাছে ধরা পড়াটা ছিল আকস্মিক। স্নানঘরের দরজার তালার নবটাতে যে ভিতর থেকে চাপ দেয়া হয়নি, সেটা তার মাথায় ছিল না। বহুব্রীহিকে তার এক বন্ধুর বাসায় পৌঁছে দিয়ে কাজল যে ঘরে ফিরেছিল, সেটা সে টের পেয়েছিল, কিন্তু স্নানঘরের দরজাটা বন্ধ ভেবে সে ধরেই নিয়েছিল কাজলের এখানে আসার সুযোগ নেই। তাছাড়া ঘরে যেহেতু আরো একটা টয়লেট রয়েছে, তাই ভেবেছিল কাজল যদি বাইরে থেকে এসে হাত-পা ধুতে চায়, তাহলে অন্যটা ব্যবহার করতে পারবে। কাজল যখন স্নানঘরের দরজাটা ফট করে খুলে ফেলল অনুভব তখন পূর্ণোদ্যমে স্বমেহনে রত। তার একহাতে মোবাইল, অন্যহাতে উত্থিত পৌরুষ। কাজলের মুখ থেকে শুধু দুটো শব্দ বের হয়েছিল, “হোলি কাউ!”

তারপর থেকে তাদের মধ্যে কথা বন্ধ।

[দুই]

বহুব্রীহির বয়স তের হলেও অনুভবের মনে হয় তার মানসিক বয়স কমপক্ষে বিশ। সদ্য কৈশোরে পড়া ছেলেদের নিয়ে মা-বাবাকে যেসব ঝামেলা পোহাতে হয়, সেসবের কিছুই তাদেরকে পোহাতে হচ্ছে না এখনও। সে একটা নামকরা ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়ে। তার শখ তথ্যচিত্র দেখা এবং ভিডিও গেইম খেলা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার তেমন বিচরণ নেই। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামে সময় কাটানোকে সে সময়ের অপচয় মনে করে। এই বয়সেই সে যে কত বিচিত্র সব বিষয় জানে, তা দেখে আশ্চর্য হয় অনুভব।

ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশুনা করলেও বহুব্রীহির সঙ্গে ঘরে তার বাবা-মায়ের কথোপকথন হয় বাংলায়। এ বিষয়ে কাজল খুব কড়া। অনুভবের সঙ্গে কথা বলার ক্ষেত্রে কাজল অহরহ ইংরেজি শব্দ ব্যবহার করলেও বহুব্রীহির সঙ্গে যতটা সম্ভব কম ব্যবহার করে। বহুব্রীহি যাতে বাংলাটা অত্যন্ত শেখে, তাই এই প্রচেষ্টা কাজলের। তার এই দিকটা অনুভবের ভালো লাগে।

এটাই নয় কেবল, কাজলের সবকিছুই তার ভালো লাগে। কাজল স্মার্ট, স্বনির্ভর, বুদ্ধিমতী। সে বই পড়তে ভালোবাসে। জৈবপ্রযুক্তিতে পড়াশুনা করলেও শৈশবের ছবি আঁকার অভ্যাস ত্যাগ করতে পারেনি, যার ছাপ ঘরের সমস্ত দেয়াল জুড়ে, এমনকি স্নানঘর পর্যন্ত। সে অতি আধুনিক নয়, ঠিক যেমনটা অনুভবের পছন্দ। সে সবসময় হালকা মেকাপ করে, এমনকি ঘরেও। এ ব্যাপারে তার অভিমত হলো, যদি বাহ্যিক কোনোকিছু আমার সৌন্দর্যকে ফুটিয়ে তুলতে সাহায্য করে, তাহলে আমি কেন তার সাহায্য নিব না? তবে নিজের চেহারা ঢেকে-ফেলা মেকাপকে সে একদমই পছন্দ করে না। তার সবচেয়ে বড় গুণ হলো, সে অন্যের ব্যাপারে ঋণাত্মক মতামত দেয় না। অনুভব এই ব্যাপারে মুগ্ধ, কারণ তার পরিচিত সকল নারীই, হোক সে নারীবাদী, অন্যের, বিশেষ করে নারীদের ব্যাপারে, জঘন্যসব মতামত দেয়। যেমন, কাজল ভারি মেকাপ অপছন্দ করলেও যারা সেটা করে তাদের ব্যাপারে তার মন্তব্য হলো, ‘যার ইচ্ছে করে সে করে; এখানে আমার বলার কী আছে? আমি কেনো তাকে ‘আটার বস্তা মুখে মাখা’র মতো ফালতু মন্তব্য করতে যাব?’ তার অর্থের প্রতি মোহ নেই, যদিও তার বেড়ে ওঠা ধনী পরিবারে এবং তার মা বেশ ভালো অর্থকড়ির মালিক। কোনোকিছুতেই হৈচৈ করে উচ্ছাস প্রকাশ করা তার ধর্ম নয়। সে শাড়ি পরতে খুব একটা পছন্দ না করলেও বিভিন্ন অনুষ্ঠানাদিতে পরে এবং খুব সুন্দর করে পরে। তবে ঘরের মধ্যে জবরজং থ্রি-পিস বা ম্যাক্সি জাতীয় পোশাক সে পরে না, জিন্স, টি-শার্ট, ফতুয়া, ট্রাউজার, ইত্যাদি পরে। কেনাকাটা করা খুব একটা পছন্দ না করলেও প্রয়োজনীয়টা করে। চাকুরির ধকল সামলে রান্নায় খুব একটা সময় দিতে পারে না বটে, তবে প্রায়শই শুক্র-শনিবারে নিজ হাতে রান্না করে এবং খুব ভালোই করে। মাসে দুয়েকবার রেস্টুরেন্টে খায় তারা। কাজলই এই অভ্যাস গড়ে তুলেছে তার মধ্যে। তাদের দুজনের মতেই এতে রুচির পরিবর্তন হয়। বাংলাদেশী গতানুগতিক মায়েদের মতো সে বহুব্রীহির পড়াশুনা নিয়ে হৈচৈ করে না। অবশ্য বহুব্রীহি নিজেই এ ব্যাপারে এতটা সচেতন যে কাজলকে এ নিয়ে ভাবতে হয় না। সিনেমা, টিভি সিরিজ দেখার ক্ষেত্রে সে হিংস্রতা অপছন্দ করে, যদিও ‘গেইম অব থ্রোনস’ তার পছন্দের তালিকায় অন্যতম। তার মতে এটা ‘স্পেশাল কেইস’; এখানে হিংস্রতা রাজনীতিরই একটা অংশ, প্রধান বিষয় নয়। অনুভবও তার সঙ্গে একমত। সব মিলে কাজলের চরিত্রের এমন কোনো দিক নেই, যেটা অনুভব খুব অপছন্দ করে।

বইয়ের ফ্লাপে সংযুক্ত লেখা

একটা মানুষের প্রায় সবকিছু পছন্দ হলেও কেন তার প্রতি যৌনতার অনুভূতি হারিয়ে গেল, এটা কিছুতেই বুঝতে পারে না অনুভব। এমন না যে কাজলের শারীরিক গঠন তার অপছন্দ। কাজল লম্বায় পাঁচ ফুট পাঁচ ইঞ্চি, অনুভবের থেকে দুই ইঞ্চি কম; তার রং কটকটে ফর্সা নয় আবার শ্যামলাও নয়, অনুভবের মতে মোহনীয়; তার প্রাকৃতিক ভ্রু জোড়া একটু চ্যাপ্টা বটে তবে সেটা অনুভবের দেখার সুযোগ হয় না; কাজলের পার্লারে যাওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ ওটি। নাকটা অতি খাড়া নয়, আবার চ্যাপ্টাও নয়; ঠোঁট পুরু; তার চোখের বর্ণনা দেয়া অনুভবের পক্ষে সম্ভব নয়; ঐ চোখের জন্যই সে তার প্রেমে পড়েছিল। তার স্তন মাঝারি এবং যৌনতায় সে উগ্র। সেই যৌনতায়ই আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে অনুভব।

সকালে অফিসে একা গেলেও বিকালে বাসায় ফেরার পথে অনুভব সাধারণত কাজলকে নিয়ে ফেরে। গাড়ি কেনার পর থেকে এটাই তাদের দৈনন্দিন রুটিন। অনুভবকে অফিসের কাজে বাইরে যেতে না হলে গত কয়েক বছরে এর খুব একটা ব্যত্যয় ঘটেনি। গত দুদিন অবশ্য তাকে একাই ফিরতে হয়েছে। অনুভবকে অপেক্ষা করতে দেখেও কাজল তার গাড়ির কাছে না গিয়ে রিকশায় উঠেছিল। আজ অনুভব আগেই মুঠোফোনে বার্তা পাঠিয়েছিল। ওদিক থেকে কোনো উত্তর আসেনি দেখে সে আবার লিখেছিল, “আমার সাথে কথা বন্ধ হলেও মেসেজ আদান-প্রদান তো চলতে পারে, মহারানি। আজও কি একা ফিরবে? তাহলে আমি আর অপেক্ষা করব না।” প্রায় মিনিট দশেক পরে ওপাশ থেকে জবাব এসেছিল, “ওকে। ওয়েট ফর মি দেন।” বাংলা টাইপ করতে শেখার পর থেকে কাজল সাধারণত ইংরেজিতে মেসেজ লেখে না। অনুভব বুঝতে পারল কাজলের রাগ একটুও কমেনি। ‘আমার জন্য অপেক্ষা করো’ লেখার মধ্যে যে রোমান্টিকতা রয়েছে, সেটাকে এড়িয়ে যেতেই ইংরেজির আশ্রয় নিয়েছে সে।

কাজল নামটা অনেক পছন্দের হলেও অনুভব মাঝে মাঝে তাকে মহারানি সম্বোধন করে। বিয়ের পরে প্রথম দিকে হঠাৎ করেই একদিন তাকে এই সম্বোধনে ডেকেছিল। কাজল বলেছিল, এর মাধ্যমে অনুভব আসলে নিজেকে মহারাজা বানাচ্ছে। অনুভব মজা করে বলেছিল, “মহারানি বলতে মানুষ একজনকেই চেনে। রানি ভিক্টোরিয়াকে। তার আবার স্বামী ছিল না। আর থাকলেও সে মহারাজা হতো না। এমনকি ইংল্যান্ডের বর্তমান রানির স্বামীকেও কেউ রাজা বলে না। রাজার স্ত্রীলিঙ্গ রানি হলেও রানির পুংলিঙ্গ সবসময় রাজা হয় না। সুতরাং তোমার যুক্তি বাতিল।” সেদিন কাজল যদি যুক্তি না দেখাতে যেত, তাহলে অনুভবও শব্দটার এমন চুলচেরা বিশ্লেষণে যেত না এবং ঐ একবার ডাকার পরেই হয়তো তা হারিয়ে যেত। কিন্তু ঐ দিনের পরে শব্দটা অনুভবের মাথায় গেঁথে গিয়েছিল এবং এরপরে সে মাঝে মাঝেই শব্দটা প্রয়োগ করতে শুরু করল।

বেশ ভারি এক পশলা বৃষ্টি হওয়ায় রাস্তাঘাটে যানবাহন কিছুটা কম ছিল, ফলে অন্যদিনের চেয়ে অনেক কম সময়ে কাজলের অফিসের সামনে পৌঁছে গেল অনুভব। এখন আর বৃষ্টি নেই। কাজলের অফিসের সামনে অবস্থিত নান্দনিক রাবার গাছটার তলায় গাড়িটা পার্ক করে সে ঘড়ি দেখল, অফিস শেষ হতে এখনও মিনিট পনেরো বাকি। সময়টা কী করে কাটানো যায় ভাবতে ভাবতে ফুটপাতের দোকান থেকে একটা বেনসন লাইট কিনে ধরাল সে। সিগারেটে দু-টান দিয়ে গাড়ির দিকে তাকাতেই দেখল কাজল দাঁড়িয়ে গাড়ির পাশে। আরেকবার ঘড়ি দেখল অনুভব। কাজলের অফিস শেষ হতে এখনও দশ-এগারো মিনিট বাকি। তাহলে কি তাকে দেখেই সে আগে বেরিয়ে এসেছে? এমনটা আগে কখনো হয়নি।

কাজলের পোশাকেও অবাক হলো অনুভব। অফিসে সে সাধারণত কোট-প্যান্ট পরে আসে। তার অফিসের নারী সহকর্মীদের মধ্যে সে একাই নাকি এই পোশাক পরে। এটা মূলত পুরুষদের ‘ড্রেসকোড’। নারীদের ক্ষেত্রে শিথিলযোগ্য। শাড়ি, থ্রিপিস, জিন্স, এমনকি হিজাবও চলে। আজ সে পরেছে শাড়ি। বেগুনি পাড়ের নীল কাতান শাড়ি। গত পূজায় ফেসবুকের কোনো এক পেইজ থেকে কিনেছিল। অনুভবকে রং বাছাই করে দিতে বলেছিল বলেই মনে আছে তার। তাহলে কি অফিসে বিশেষ কোনো আয়োজন ছিল?

সিগারেটে আরেকটা টান দিয়ে রাস্তায় ফেলে জুতার তলায় পিষে আগুনটা নিভিয়ে ফেলল অনুভব, তারপর গাড়ির দিকে রওয়ানা হলো। কাছে পৌঁছাতেই অন্য দিনের মতো মিষ্টি করে হাসল কাজল। ‘তাহলে রাগ ভেঙেছে মহারানির!’ ভাবল অনুভব। কিছু একটা বলা উচিত মনে করে সে বলল, “তোমার অফিস ছুটি হতে তো আরো দশ মিনিট বাকি।“

অনুভবের কথার উত্তর না দিয়ে তার সিগারেট খাওয়া নিয়ে টিপ্পনি কাটল কাজল, “তাহলে ছাত্রজীবনের সকল অভ্যাস আবার ফেরত আসছে?”

অনুভব বুঝতে পারছে না কাজল কেন একটা সিগারেটেই এমন মন্তব্য করল। এরকমটা তার স্বভাব নয়। আর অনুভব যে মাঝে মাঝেই সিগারেট টানে না, এমনও নয়। “আর কী দেখলে?” সে বলল।

“বাথরুমে যা দেখলাম, সেটাও কি ছাত্রজীবনের অভ্যাস নয়? যখন প্রেমিকা বা স্ত্রী ছিল না।”

তার মানে কাজল ঐ বিষয়ে কথা বলতে চায়, ভাবল অনুভব। তার কি এখনই ঐ বিষয়ে কথা বলা উচিত, নাকি অপেক্ষা করা উচিত? “ওহ, তাই বলো।” সে এমনভাবে বলল যেন ওটা কিছুই ছিল না। তারপর পরিবেশটাকে আরো সহজ করার লক্ষ্যে যোগ করল, “স্টিয়ারিংয়ে বসবে নাকি?”

“না, তোমার গাড়ি তুমিই চালাও,” একটু গম্ভীর স্বরে বলল কাজল।

চালকের আসনে বসতে বসতে অনুভব বলল, “আমার গাড়ি মানে? আমার একার নামে কিছুই না, তুমি জানো।”

“টাকাটা তো তোমার।”

“তুমি এভাবে কথা বলছ কেন? এভাবে তো তুমি কথা বলো না!”

“তাহলে আমি কীভাবে কথা বলি?” কাজলের গলার স্বরে স্পষ্ট রাগের আভাস।

“তুমি তোমার মতো করে বলো এবং সেটা আর যা-ই হোক, এভাবে নয়।”

“তা বলেছ বেশ। এভাবে আমাকে মানায়ও না, তাই না?”

এবারে কাজলের গলার স্বরে রাগ না থাকলেও শ্লেষ ছিল। অনুভব এ নিয়ে আর কথা বলতে চায় না। মোড় ঘুরে মূল রাস্তায় এসে বলল, “শাড়িটাতে তোমাকে সুন্দর লাগছে।”

“সে তো তুমি সব পোশাকের ক্ষেত্রেই বলো। তারপরও ধন্যবাদ।“

ঘাড় না ঘুরিয়ে আয়নাতে কাজলের মুখ দেখে অনুভব তাকে বোঝার চেষ্টা করল। শাড়িতে তাকে সুন্দর লাগছে বলায় সে খুশি হয়েছে। সকল মেয়েই হয়। শুধু মেয়ে নয়, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাই হয়। চেহারা-সুরত যাই-ই হোক, আমরা প্রত্যেকেই একেকজন নার্সিসাস। মুখে বলি যে আমার নাকটা বোঁচা তো দাঁতটা বাঁকা, কিন্তু আমাদের প্রত্যেকটা অঙ্গকেই আমরা খুব যত্নসহকারে ভালোবাসি, সুন্দর মনে করি। এমনকি তলপেটের ভুঁড়িটাকেও টিপে টিপে দেখি। আহ! কত মোলায়েম! হ্যাঁ, অপরের সৌন্দর্য আমাদের ভালো লাগে বটে, তবে তাতে নিজের সৌন্দর্যে এতটুকু অমুগ্ধ হই না আমরা। আর কেউ যদি আমাদের সুন্দর বলে, আমরা ফুলে-ফেঁপে গ্যাস-বেলুন হয়ে যাই।

কাজলকে আরেকটু খুশি করার জন্য সে বলল, “তোমার কাছেই শেখা। সবকিছুতে সুন্দরটাকেই খোঁজার বা দেখার এবং অন্যকে প্রশংসা করার অভ্যাসটা তো তুমিই আমার মাঝে গড়ে তুলেছ।”

আয়নাতে বেশ মুখজোড়া একটা হাসি দেখতে পেল অনুভব।

“তোমার বদান্যতা,” কাজল বলল। তারপর ফের গম্ভীর স্বরে নিজের মনেই বলল, “কতকিছুই তো শিখেছি আমরা একে অন্যের কাছ থেকে!”

…… (বাকিটা পড়তে নিচের লিংকে গিয়ে বই কিনুন 😀)

…………………….


প্রাপ্তিস্থানঃ
চৈতন্য প্রকাশনীর অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজ
চন্দ্রদ্বীপ অনলাইন শপ
রকমারি অনলাইন শপ
বাতিঘর ঢাকা
বাতিঘর চট্টগ্রাম
বাতিঘর সিলেট

*প্রাপ্তিস্থানগুলো নিয়মিত আপডেট করা হবে।

Leave a Comment