গল্পধর্ম সমালোচনাস্যাটায়ার

উষ্ট্রমূত্র পানের উৎস অনুসন্ধানে

সময়টা আটশ সালের একটু আগে পরে হবে। মোহাম্মদ ও কৃষ্ণ এক পার্টিতে একত্রিত হয়েছেন। পার্টি শেষে দুই বন্ধুর বিশেষ বন্ধুসুলভ আলাপঃ

কৃষ্ণঃ কী খবর দোস্ত? পৃথিবীতে দিনকাল কেমন যাচ্ছে?

মোহাম্মদঃ ভালোই তো যাচ্ছিলো। কিন্তু এই শেষ জীবনে এসে বড় বিপদে পড়েছি। তোমার সাহায্য দরকার।
কৃষ্ণঃ কী বিপদ বলো বন্ধু। বিপদের বন্ধুই তো প্রকৃত বন্ধু।
মোহাম্মদঃ আসলে একটু লজ্জা লাগছে দোস্ত।
কৃষ্ণঃ আব্বে হালায় বন্ধুর কাছে লজ্জা করতে আছে নাকি। বলেই দেখো না।
মোহাম্মদ ইতস্তত করে শেষ পর্যন্ত বলেই ফেলেন, “বউগুলা নিয়া বড্ড ঝামেলায় আছি। একটার কাছে যাই তো আরেকটায় রাগ করে। গোটা দশেক বউ নিয়েই আমি এতো ঝামেলায় আছি, তুমি ভাই অতো অতো সখী ও বউ কী করে সামলাতে?”
কৃষ্ণঃ ওহ, এই ব্যাপার! তুমি আসলে গোড়ায়ই একটা গলদ করে বসে আছো। এখন আর এটা সামলানো সম্ভব নয়।
মোহাম্মদঃ কী ভুল করলাম বলো তো দেখি।
কৃষ্ণ বিজ্ঞের মতো একটা হাসি দিয়ে বললেন, “তুমি আমি দুজনই নিজেকে ঈশ্বর/আল্লাহর অবতার দাবি করছি। কিন্তু তুমি যে ভুলটা করেছো তা হলো, তুমি নিজেকে আল্লাহ বলে ঘোষণা দাওনি, তার প্রেরিত পুরুষ বলেছো। আমি নিজেকে অবতার দাবি করলেও সাথে বলেছিলাম, আমিই ঈশ্বর। তোমার স্ত্রীরা তোমাকে মানুষই ভাবেন, কিন্তু আমার স্ত্রী ও সখীরা আমাকে ঈশ্বর ভাবতো। ঈশ্বরের প্রতি তো মানুষ রাগ করতে পারে না, তাই তারা একে অপরকে ইর্ষা করতো আর কেউ আমার শয্যাসঙ্গী হতে পারলে নিজেকে ধন্য মনে করতো। আমি চামে মজা নিতাম। যখন যার কাছে ইচ্ছে যেতাম। কোন বকাঝকা খাওয়ার ঝামেলা ছিলো না।”
মোহাম্মদ দীর্ঘশ্বাস ছাড়েন। তারপর কৃষ্ণকে কাছে ডাকেন ও ফিসফিস করে বলেন, “আরেকটা বিষয় বন্ধু। লজ্জা লাগলেও বলি, তোমার কাছে কি ইয়ে মানে ঐ বিষয়টার ওষুধ আছে? খাটতে খাটতে মরে গেলাম দোস্ত।”
কৃষ্ণ হাসি দিয়ে বলেন, “এতে আর লজ্জা কী! খুবই সহজ ওষুধ। রোজ সকালে খালি পেটে এক গ্লাস গোমূত্র পান করবে। দেখবে কী হয়।”
মোহাম্মদ নিরাশমুখে কৃষ্ণের দিকে তাকান এবং বলেন, “এই মরুভূমিতে গরু পাব কোথায় দোস্ত। উট আর গাধা ছাড়া আর কিছু তো নেই।”
কৃষ্ণ একটু ভাবেন, তারপর অবজ্ঞার স্বরে বলেন, “তাহলে ওগুলোর কোন একটার মূত্রই ট্রাই করে দেখো না। কাজ হলেও হতে পারে।”
বাকিটা ইতিহাস।

Leave a Comment