কোরানের ৯:২৯ আয়াতে অমুসলিমদের জন্য অবমাননা কর হিসেবে জিজিয়া করকে কোরানের মাধ্যমেই বৈধতা দিয়েছেন আল্লাহ ওরফে মোহাম্মদ।
“তোমরা যুদ্ধ কর আহলে-কিতাবের ঐ লোকদের সাথে, যারা আল্লাহ ও রোজ হাশরে ঈমান রাখে না, আল্লাহ ও তাঁর রসূল যা হারাম করে দিয়েছেন তা হারাম করে না এবং গ্রহণ করে না সত্য ধর্ম, যতক্ষণ না করজোড়ে তারা জিযিয়া প্রদান করে।” (সুরা আত তাওবাহ)
জিজিয়া কোন স্বাভাবিক কর নয়। ইসলামিক রাষ্ট্রে বিধর্মীদের (খ্রিষ্টান ও ইহুদি) জন্য অবমাননা এবং মানহানিকর কর হিসেবে মোহাম্মদ জিজিয়া প্রথা চালু করেন। জিজিয়া একইসাথে আর্থিক ও সম্মানহানিকর। বিধর্মীদের দু’দিক দিয়েই কোনঠাসা করে ইসলাম গ্রহণে বাধ্য করার জন্যই জিজিয়া অবতারণা।
বিখ্যাত ইসলামী বিশ্লেষক আল-জামাকশারী জিজিয়া প্রদানের ব্যাখ্যা দিয়েছেন:
তাদের নিকট থেকে জিজিয়া নেয়া হবে অবমাননা ও মর্যাদাহানিকরভাবে। জিম্মিকে সশরীরে হেঁটে আসতে হবে, ঘোড়ায় চড়ে নয়। যখন সে জিজিয়া প্রদান করবে, তখন কর-আদায়কারী বসে থাকবে আর সে থাকবে দাঁড়িয়ে। আদায়কারী তার ঘাড় ধরে ঝাঁকি দিয়ে বলবে, ‘জিজিয়া পরিশোধ কর।’ এবং জিজিয়া পরিশোধের পর আদায়কারী ঘাড়ের পিছনে একটা চাটি মেরে তাকে তাড়িয়ে দিবে।
মিশরের বিখ্যাত সুফি পণ্ডিত আস-সারানি:
অতপর আমির তার ঘাড়ে একটা চাটি মারবে এবং আমিরের সামনে উপস্থিত লোকেরা (মুসলিম) তাকে রূঢ়ভাবে হটিয়ে দিবে।
যদিও কোরানে আহলে কিতাবের অনুসারীদের বাইরের মানে খ্রিষ্টান ও মুসলিমদের ছাড়া অন্য ধর্মের অনুসারীদের ওপর জিজিয়া আরোপ করার কোন কথা বলা নেই, তবুও ভারতের ইসলামী পণ্ডিতরা একই পন্থা অবলম্বন করার নির্দেশনা দিয়েছেন। (কোরানে আহলে কিতাবের অনুসারীদের বাইরের মানুষদের ব্যাপারে কোন নির্দেশনা না থাকার কারণ খুবই স্পষ্ট। ইসলাম এর বাইরের কোন ধর্মের অনুসারীদের স্বীকার করে না। তাদের জন্য ইসলামে একটাই পথ- হয় ইসলাম গ্রহণ করো, নয় মরো।) জনপ্রিয় সুফী সাধক শেখ আহমদ সিরহিন্দী অমুসলিমদের প্রতি সম্রাট আকবরের উদার ও সহনশীল নীতি অসন্তুষ্ট হয়ে তাকে ইসলামী আইনের লংঘন আখ্যায়িত করে চিঠি পাঠান। চিঠিতে সিরহিন্দী লেখেন-
‘ইসলামের সম্মান ‘কুফরী’ (অবিশ্বাস) ও ‘কাফির’ (অবিশ্বাসী) কে অপমান করার মধ্যে নিহিত। যে কাফিরকে সম্মান দেয় সে মুসলিমকে অমর্যাদা করে। তাদের উপর জিজিয়া আরোপের উদ্দেশ্য হলো, এমন করে তাদেরকে অবমানিত করা যাতে তারা ভাল পোশাক পরতে বা জাঁকজমকের সাথে বাস না করতে পারে। তারা ভীতসন্ত্রস্ত ও কম্পমান থাকে।’
কাশ্মীরের সুলতান জয়নুল আবেদীনের কাছে এক চিঠিতে পারস্যের ইসলামী পণ্ডিত লেখেন:
‘তাদের উপর জিজিয়া আরোপের প্রধান উদ্দেশ্য হলো তাদেরকে অবমানিত করা। আল্লাহ তাদেরকে অসম্মানিত করার জন্যই জিজিয়া প্রতিষ্ঠা করেছেন। এর উদ্দেশ্য হলো তাদেরকে অবমানিত এবং মুসলিমদের সম্মান ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা।’
উপমহাদেশে অমুসলিমদের জন্য জিজিয়ার চেয়ে ভয়ানক ছিল ভূমিকর বা খারাজ। আকবরের সময়কালে খারাজের হার ছিল সবচেয়ে কম, এক তৃতীয়াংশ; যদিও তখনও কাশ্মীরে ছিল তিন চতুর্থাংশ। আলাউদ্দীন খিলজীসহ অনেক শাসকের শাসনামলে খারাজের পরিমান ছিল ৫০ থেকে ৭৫ শতাংশ। খারাজ দেবার পদ্ধতি ছিল আরো ভয়াবহ। সুলতান আলাউদ্দীন খিলজী বিজ্ঞ ইসলামী পণ্ডিত কাজী মুঘিসুদ্দিনের কাছে উপদেশ চাইলে কাজী এভাবে বর্ণনা দেন:
‘আদায়কারী যদি তার (খারাজ দাতার) মুখে থু-থু দিতে চান, তাহলে সে মুখ হা করবে। তার উপর এ চরম অপমান ও আদায়কারী কর্তৃক তার মুথের ভিতরে থু-থু দেওয়ার উদ্দেশ্য হলো এ শ্রেণীর উপর আরোপিত চরম বশ্যতা, ইসলামের গৗরব ও বিশ্বাসের প্রতি মহিমান্যতা এবং মিথ্যা ধর্মের (হিন্দুত্ববাদ) প্রতি অমর্যাদা প্রদর্শন।’
জিজিয়া ও খারাজের হাত হতে মুক্ত হওয়ার একমাত্র উপায় ছিল কলেমা পড়ে ইসলাম গ্রহণ করা। ফিরোজ শাহ তুঘলকের স্মৃতিকথা ‘ফতুয়া-ই-ফিরোজ শাহী’তে উল্লেখ রয়েছে:
‘আমি আমার অবিশ্বাসী প্রজাদেরকে নবির ধর্ম গ্রহণে উৎসাহিত করি। আমি ঘোষণা করি যে, যারা ধর্ম পরিবর্তন করে মুসলমান হবে তারা প্রত্যেকেই জিজিয়া কর থেকে মুক্তি পাবে। সর্বত্র জনগণের মাঝে এ সংবাদ পৌঁছে যায় ও বিপুল সংখ্যক হিন্দু নিজেদেরকে উপস্থাপন করে ইসলামের সম্মানকে স্বীকার করে নেয়। এরূপে তারা দিনের পর দিন সর্বত্র থেকে এগিয়ে আসে ও ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে জিজিয়া থেকে মুক্ত হয়, এবং উপহার ও সম্মানের দ্বারা আনুকূল্য পায়।’
=============
লেখাটি ব-দ্বীপ প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত ‘জিহাদ’ বইয়ের আলোকে লেখা।
ওটা মূল লেখা নয়। ঐ সাইট আমারটা কপি করে পোস্ট করেছে। এটা আমি লিখেছিলাম ২০১০ সালে।
বলদামার্কা পোস্ট। ভাল করে পড়াশুনা করে পোস্ট করুন। জিজিয়ার বিনিময়ে ৮০ প্রকার উপকর রদ হত। নারী, বৃদ্ধ , শিশু , আর্থিকভাবে আক্ষম, কৃষক , যুদ্ধে যোগদানকারী, আরো অনেককে জিজিয়া কর দিতে হত না। আর সক্ষম অমুসলিম জন্য জিজিয়া আর সক্ষম মুসলিমদের জন্য রাকাত বাধ্যতামূলক। এগুলো অমান্যকারীকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সাজা দেওয়া হত। জিজিয়া নিয়ে এত চুলকানি কেন? হিন্দু শাস্ত্রে আছে “পরাজিত রাজপুরুষ বলির জন্য উত্তম”।